অরণ্যে অরুণোদয় (হার্ডকভার)

সাইকেলের ঘন্টিটা একটানা বাজল কিছুক্ষণ। সংকীর্ণ পায়েচলার পথ। রেললাইনের একেবারে কোলঘেষে চলে গেছে গাইড ব্যাংকের কিনারা অবধি। দুধারে ঘন বন। ছোটছোট শেয়াকুলের ঝোপ। ভুতরাজা, আকন্দ আর লতিয়ে বেড়ানো বিলিহাঁচড়ার ঝাড়, রেলপথের বাঁহাতে গুলঞ্চ আর তেলাকুচার লতা সারিসারি বনবাবলার ডাল বেয়ে ঝুলছে বাতাসে। কোথায় যেন কাঠমল্লিকা ফুটেছে। তার মউমউ গন্ধে বুনোবাতাস এখন মাতাল।
সেই বৃটিশ আমলের রেলপথটির প্রয়োজন ফুরিয়েছে কতকাল আগে। এখন হারানো দিনের স্মৃতি হয়ে নির্জনে সে পড়ে আছে দুগাছি মালার মত। ঘন দূর্বাঘাসের সবুজ-কোমল বুকের তলে কোথাও-কোথাও ঢাকা পড়েছে তার শরীর। লোহার মরচেধরা পাতদুটি পাশাপাশি স্লিপারের বুক আঁকড়ে পড়ে আছে বহুকাল। তার বুকের ওপর এখন আর মদমত্ত লৌহশকটের তাণ্ডবনৃত্য নেই, তাই সংস্কারও নেই। দিনেদিনে জীর্ণ হয়ে গেছে অসংখ্য কাঠের স্লিপার। কেবল মার্বেলের মত মসৃণ পাথরের নুড়িগুলি এখনও রয়েছে অক্ষয় হয়ে।