Our User Product Reviews

বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর অভ্যন্তরীণ রাজনীতির বিষয়ে লেখা একটি বই যেখানে একজন ভিসি এর অনৈতিক দিক ফুটিয়ে তুলা হয়েছে। একই সাথে তরুণ সমাজের অবক্ষয় এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর বিষয়টিও আছে

দারুণ

it’s a average kind of books

It was the story about university politics.. How a Vice chancellor manipulate students for his use. Bt at the end what happened ? Go n read it...

মহব্বত আলী দেশের কোনোএক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য। আর সব উপাচার্য মহারাজের ন্যায় তিনিও থাকেন দূর্গতুল্য বাড়িতে, যে বাড়ির নাগাল কোনোক্রমেই সাধারণ শিক্ষার্থীরা পায় না। অন্যান্য দিনের তুলনায় আজকে বেশ সক্কাল সক্কাল ঘুম থেকে উঠেই চলে যান ভিসি ভবনে তার সাধের গোয়াল ঘরে। একাডেমিক কাউন্সিলের চাইতে গোয়ালঘর মহব্বত সাহেবের ঢের ভালো লাগে!গোয়ালঘরের গাভীগুলোই তাকে তার কদাকার চেহারা আর বেঢপ বউয়ের কথা খানিকটা হলেও ভুলিয়ে দেয়। মহব্বত সাহেব গোয়ালঘর থেকে ফিরে বাসার কাজের মেয়েটিকে দেখতে পান। মেয়েটি বড্ড পাজি, কিছুতেই বশে আসতে চায় না। আজ সকালেই হাজির হয়েছে ছাত্রনেতা কালা তারেক। বিশ্ববিদ্যালয় মহব্বত সাহেবের হাতে আছে এই কালা তারেকরা আছে বলেই তারর মতে নিরীহ লোক ভিসি হিসেবে টিকে আছেন। উপাচার্যরা তো আজকাল সবচে' নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে। তাই কালা তারেক গংদের তিনি বেশ তোয়াজ করে চলেন।আজ সকালে আসার কারণ জানতে চাইলে কালা তারেক সাহেব জানান,দলের সেক্রেটারি জুয়েল একটি হিন্দু মেয়েকে রেপ করেছে।এই সেরেছে! মহব্বত আলীর মনে পড়লো জুয়েল এমপির নিকটআত্মীয়। তিনি কালা তারেক কে বললেন এসব সামাল দিতে,সর্বাত্মক সহযোগিতা তিনি দেবেন। আজ সকালেই আবার টিচার সিলেকশন বোর্ডে বসতে হবে। নিজের দলের ক্যান্ডিডেট কে টিচার বানাতেই হবে -এ পরিকল্পনা নিয়ে বের হলেন মহব্বত আলী। ভাইভা বোর্ডে তিনসহ তিন তার পক্ষের বাকি একজন বেশ ঘাড়ত্যাড়া, সোজাকথায় সৎ আর স্পষ্টভাষী ।সেই সৎ টিচার আবার চায় ভালো রেজাল্টধারী এক হিন্দু মেয়েকে টিচার বানাতে! কাভি নেহি! মনে মনে হুংকার দিয়ে উঠলেন মহব্বত আলী। একে মেয়ে তার ওপর হিঁদু! কোনোভাবেই তা হতে দিতে পারেন না মহব্বত আলী। আজই এলাকায় পাট প্রতিমন্ত্রী আসছেন। সর্বনাশ! ভাবলেন মহব্বত আলী।না গেলেই নয়-ভাবতে ভাবতে বের হতে গিয়ে দেখলেন ধর্ষনের বিচার চেয়ে রোগাটে এক মেয়ে প্লাকার্ড নিয়ে দাড়িয়ে আছে তাও আবার একা! প্রতিমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানাতে বেরিয়ে গেলেন উপাচার্য। এদিকে প্লাকার্ড ধরা মেয়ে নীলাকে দেখে দলে দলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এসে যোগ দিলো। তারা সমস্বরে বিচার চাইতে লাগলো। উপায়ন্তর না দেখে ভিসি পুলিশ পাহারায় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের তীব্র প্রতিবাদের মুখে পড়লো। এবার তিনি কালা তারেককে তার দলবল নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করতে নিদের্শ দিলেন মহব্বত আলী। কিন্তু তারপর? না, আর বলবো না জানতে পড়ুন বইটি। প্রথম প্রথম মনে হচ্ছিল যেন ছফার 'গাভী বৃত্তান্ত'' পড়ছি! বড্ড মিল মিল লাগছিলো।সেই অযোগ্য ভিসি,গোয়ালঘর,নোংরা ছাত্র আর শিক্ষক রাজনীতি এগুলোতো আহমদ ছফার বইতেও ছিলো। কিন্তু না,কিছু মিল থাকলেও মূল জায়গাটিতে অমিল আছে।শেষে রয়েছে বাস্তবধর্মী টুইস্ট। বইটি লেখা হয়েছে ২০০৫ সালে।কিন্তু ২০১৬ সালে পড়তে গিয়েও নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে মনে অজান্তেই মিল খুঁজে পাচ্ছিলাম। অথচ বিশ্বাস করুন, আমি একদমই মিল খোঁজার অভিপ্রায়ে পড়িনি। সরকার পরিবর্তন হয়,কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে অযোগ্য,অসৎ আর নষ্টভ্রষ্টদের তুর্কিনাচন কখনোই থামেনা স্রেফ নামটা বদলায় মাত্র!

দেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ধর্ষণকে কেন্দ্র করে বইটি লেখা হয়েছে । সরকার পন্থী যোগ্যতাহীন এক উপাচার্যের পোষ্য এক ছাত্র নেতার ধর্ষণকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা , অভিযোগের কোন গুরুত্ব না দিয়ে এড়িয়ে যাওয়া , সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি অসাধারণ আন্দোলন ......... ঘটনার ধারাবাহিকতা পাঠককে আচ্ছন্ন করবে । রাজনীতি কিভাবে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ একেবারে নষ্ট করে দিয়ে কুৎসিত খেলাকে উজ্জীবিত করে থাকে - তারই এক অতুলনীয় উপন্যাস এটি । নোংরা মানুষদের স্বার্থের বাণিজ্যপ্রবৃত্তি আচরণ এবং নিরীহের উপর অন্যায় - সব মিলিয়ে কাহিনীর মধ্য দিয়ে জাফর ইকবাল স্যার একটি সাহসী পট চিত্রিত করেছেন । উনার অন্যতম সেরা একটি বই ।

আমাদের দেশের তরুনেরাই এ দেশকে পারে উন্নতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়, তখন সকল ছাত্র ছাত্রীরা এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করে। কিন্তু তাদের সামনে বাধা হয়ে দাড়ায় ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মহব্বত আলী স্বয়ং। ছাত্রদেরকে এক প্রতিকুল পরিস্থিতিতে ফেলে দেয়। জাফর ইকবাল স্যার মুলত তার এই বইয়ে দেখিয়েছেন, যেকোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক না কেন, তরুনেরাই টা মোকাবেলা করতে সক্ষম। যেমনটি তারা করেছিল ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে।