User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
বই: গল্পের যাদুকর জনরা: স্মৃতিচারণ মূলক সংকলন লেখক: অাহসান হাবীব প্রকাশক: সময় প্রকাশন প্রকাশ কাল: বইমেলা ২০১৩ পৃষ্ঠা: ৬৪ প্রচ্ছদ: অাহসান হাবীব মুদ্রিত মূল্য: ১০০ কাহিনী সংক্ষেপ: ২০১২ সালের ১৯ জুলাই হুমায়ূন অাহমেদ অামাদের ছেড়ে চলে গেলেন। তিনি নাই কোথাও নাই, হিমু নাই মিশির অালী নাই। বইমেলায় তার কোন নতুন বই নাই। তবে হুমায়ূন অাহমেদের সব থেকের কাছের মানুষ তার ছোট ভাই অাহসান হাবীব তাকে নিয়ে স্মৃতিচারন মূলক বই বের করলেন। বইটা মূলত বিভিন্ন সময়ে তিনি চলে যাওয়ার অাগের ও পরের স্মৃতি সংকলন, যা বিভিন্ন পত্রপত্রিকাতে ছাপা হইছিল ব্যক্তি হুমায়ূন অাহমেদ কেমন ছিল। স্মৃতি সংকলন করতে গিয়ে লেখক বলেন, "হুমায়ূন আহমেদের ভাষায়, স্মৃতি সে সুখেরই হোক বা বেদনারই হোক তা সবসময় বেদনার...।’' দাদাভাই হুমায়ূন অাহমেদকে নিয়ে লেখা স্মৃতির সে খন্ডচিত্র কখনো কখনো পাঠকের চোখ ঝাপসা করে দেয় কখনো বা মজার সব গল্পে হাসি পায়। বইয়ে ব্যক্তি হুমায়ূনকে নিয়ে একটা অধ্যায় হুমায়ূন হিউমার পড়লে তার হিমু বা মিশির অালী চরিত্রের স্বরূপ পাওয়া যায়। যেমন, 'গভীর রাতে হুমায়ূন আহমেদকে এক বিখ্যাত অভিনেতা ফোন করলো। এত রাতে ফোন পেয়ে তিনি কিঞ্চিৎ বিরক্ত। ‘হুমায়ূন ভাই, আমার অবস্থা খুব খারাপ।’ ‘কেন কি হয়েছে?’ ‘পেটে প্রচুর গ্যাস হয়েছে।’ ‘পেটে গ্যাস হয়েছে আমাকে কেন? তিতাস গ্যাসকে ফোন দিন।’ অার একটা এমন, মৃত্যুপথযাত্রী ভাইকে অাকুল হয়ে বোন জিজ্ঞেস করল, 'দাদাভাই, তোমার কি ধারণা তুমি সত্যি সত্যি বেঁচে ফিরতে পারবে?’ সে স্বভাবসুলভ রসিকতার মুডে বলল, ‘ক্যান্সারে না মরলেও মনে হচ্ছে নিউমোনিয়ায় মরতে হবে। সবাই আমাকে যে হারে দোয়া পড়ে ফুঁ দিতে শুরু করেছে!’ এই হল অামাদের হুমায়ূন স্যার। মুদ্রার উল্টো পিঠে ঠিক ভিন্ন চিত্রও অাছে, ক্যান্সার ধরা পরা থেকে শুরু করে বারডেমের হিম ঘরে তার লাশ দেখতে যাওয়া, কবরে তাকে শুইয়ে দেয়ার করুণ চিত্র। মাকে তার সন্তানের মৃত্যু সংবাদ দেবার মত ভয়াবহ দুঃসংবাদ। নিজস্ব মতামত: মজার গল্পের ফাঁকে দুঃখের স্মৃতিচারণ গুলো পড়তে পড়তে মনে হচ্ছিল যেন কোন মৃত্যু লোকের বাড়ির ভিড়ে দাঁড়িয়ে করুণ কান্নার অাহাজারি শুনছি। ছোটবেলা থেকে একান্ত কাছ থেকে দেখা বড় দাদাভাইকে নিয়ে স্মৃতিরোমন্থন গুলো অসম্ভব ভালো লাগছে। তবে বিভিন্ন পত্রিকার লেখা একত্র করার কারনে একই লেখা দু'বার অাসছে এটা বিরক্তিকর ছিল। প্রকাশের অাগে এটা দেখা উচিত ছিল।
Was this review helpful to you?
or
আহসান হাবীবের লেখা ‘গল্পের জাদুকর’ বইটি ২০১৩ সালের একুশের বইমেলায় সময় প্রকাশন থেকে প্রথম প্রকাশিত হয়। বইটির প্রচ্ছদ করেছেন আহসান হাবীব নিজেই। ‘গল্পের জাদুকর’ বইটি মূলত বড় ভাই হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে ছোট ভাই আহসান হাবীবের স্মৃতিচারণামূলক গ্রন্থ। এই বইয়ে হুমায়ূন আহমেদ চলে যাওয়ার আগে এবং পরে তাঁর স্মরণে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত আহসান হাবীবের কিছু লেখা স্থান পেয়েছে। হুমায়ূন আহমেদ বলতেন, ‘স্মৃতি সে সুখেরই হোক আর বেদনারই হোক তা সবসময় বেদনার’। আসলেই তাই। এই বইটি পড়তে গিয়ে প্রতি মুহূর্তে পাঠক সেই বেদনার অনলে দগ্ধ হবেন, সীমাহীন শূন্যতা অনুভব করবেন। এই বইয়ের প্রথম অংশে যেই লেখাগুলো স্থান পেয়েছে তার বেশিরভাগই হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর পর লেখা। তাই সেই লেখাগুলোতে স্বাভাবিকভাবেই আহসান হাবীবের ভাই হারানোর দুঃখ খুব স্পষ্ট বোঝা যায়। আর বইয়ের শেষের দিকে ‘টুকরো স্মৃতি’ নামে একটি লেখা সংযুক্ত হয়েছে। এই লেখায় আহসান হাবীব হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে বিভিন্ন মজার মজার স্মৃতিগুলো পাঠকের সাথে ভাগাভাগি করেছেন। সেই স্মৃতিগুলোর মধ্যে লেখকের শৈশবের স্মৃতি যেমন আছে, তেমনি আছে লেখকের প্রথমবার ঢাকা শহরে ভাইয়ের কাছে বেড়াতে আসার স্মৃতিও। বইয়ের একদম শেষে আহসান হাবীব ‘হুমায়ূন হিউমার’ নামে একটি লেখা সংযুক্ত করেছেন যেখানে লেখক গল্পচ্ছলে হুমায়ূন আহমেদের অসাধারণ হিউমারের পরিচয় তুলে ধরেছেন। এই অংশটি নিঃসন্দেহে পাঠকের জন্যে এই বইয়ের বিশেষ আকর্ষণ। এই বইয়ে সার্বিকভাবে আহসান হাবীব ব্যক্তি হুমায়ূনের কথা বলেছেন, তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের কথা বলেছেন। এই বই পড়ে পাঠক যতটা না তাদের চেনা লেখক হুমায়ূনকে পাবেন তার চেয়ে অনেক বেশি পাবেন তাদের অপরিচিত ব্যক্তি হুমায়ূনকে। তাই হুমায়ূন ভক্ত মাত্রই এই বইটি অত্যন্ত উপভোগ করবেন বলে আশা করা যায়। আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে বইটি খুবই ভালো লেগেছে।
Was this review helpful to you?
or
২০১৩ সালের বইমেলার সবচেয়ে বেদনার বিষয় কোনটি? সবচেয়ে কষ্টদায়ক ব্যাপার কোনটি? সেটি হুমায়ূন আহমেদের না থাকা। এবারের বইমেলা পায়নি হুমায়ূন আহমেদকে। পায়নি কোন নতুন হিমু আর মিসির আলীকে। পায়নি কোন কালজয়ী প্রেমের উপন্যাস। কিন্তু তিনি না থেকেও ছিলেন প্রবল ভাবেই। এই বইমেলা উৎসর্গই করা হয়েছে তাকে। হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে, তার সৃষ্টি নিয়ে, তার সাথে কাটানো সময়গুলির স্মৃতি নিয়ে লিখেছেন অনেকেই। বের হয়েছে নানা বই। এই সবের মধ্যে যেটি এগিয়ে ছিল সেটি হল তার ছোট ভাই আহসান হাবীবের ‘গল্পের যাদুকর’ বইটি। হুমায়ূন আহমেদের সাথে যিনি ছোটকাল থেকেই আছেন, ছিলেন একই ছাদের নিচে। তার চেয়ে ভাল হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে আর কেই বা লিখতে পারবে? সেটিই করেছেন আহসান হাবীব। ছোটকালের মজার সব স্মৃতিসহ, ক্যান্সার ধরা পড়া থেকে শুরু করে পরে হুমায়ূন আহমেদের মারা যাওয়া, তার কবর দেয়া পর্যন্ত সব স্মৃতিই এসেছে বইটিতে, অতি চমৎকার আর সাবলীল ভাষায়। শুধু কষ্টের স্মৃতি গুলিই নয়। বইটিকে অন্যসব বইয়ের চেয়ে আলাদা করা হয়েছে যে কারণে তা হল, হুমায়ূন আহমেদের হিউমারগুলিও আহসান হাবীব ফুটিয়ে তুলেছেন কলমের সূক্ষ্ম আঁচড়ে। এরকমই কয়েকটি হিউমার হলঃ ক্যান্সার ধরা পড়ার পর সেটি নিয়েও মজা করেছেন হুমায়ূন আহমেদ। আমেরিকা যাওয়ার কয়েকদিন আগে তার বোন জিজ্ঞাসা করেছিল, ‘দাদাভাই, তোমার কি ধারণা তুমি সত্যি সত্যি বেঁচে ফিরতে পারবে?’ সে স্বভাবসুলভ রসিকতার মুডে বলল, ‘ক্যান্সারে না মরলেও মনে হচ্ছে নিউমোনিয়ায় মরতে হবে। সবাই আমাকে যে হারে দোয়া পড়ে ফুঁ দিতে শুরু করেছে!’ সে বার মার হার্ট এটাক হলে তাকে হাসপাতালে দেখতে গেলেন হুমায়ূন আহমেদ। তখন তার মা মোটামুটি সামলে উঠেছেন। হুমায়ূন আহমেদ গম্ভীর মুখে বলল, ‘আম্মা এবার সিগারেটটা ছাড়েন।’ হেসে উঠলো সেখানে উপস্থিত সবাই। গভীর রাতে হুমায়ূন আহমেদকে এক বিখ্যাত অভিনেতা ফোন করলো। এত রাতে ফোন পেয়ে তিনি কিঞ্চিৎ বিরক্ত। ‘হুমায়ূন ভাই, আমার অবস্থা খুব খারাপ।’ ‘কেন কি হয়েছে?’ ‘পেটে প্রচুর গ্যাস হয়েছে।’ ‘পেটে গ্যাস হয়েছে আমাকে কেন? তিতাস গ্যাসকে ফোন দিন।’ এরকম অসংখ্য ‘হুমায়ূন হিউমার’ উঠে এসেছে বইয়ের পাতায় পাতায়। এসবের পাশে উঠে এসেছে অনেক করুন স্মৃতি। উঠে এসেছে আমেরিকা থেকে লাশ এলে, পরিবারে সবাই মিলে বারডেমের হিমঘরে গিয়ে সেই লাশ দেখার স্মৃতি। পাঠকের চোখ যখন ভিজে উঠবে আপনাতেই। আহসান হাবীবের বর্ণনায়ঃ ‘বারডেমের হিমঘরে যখন তাকে দেখতে গেলাম তার মুখটা কেমন নীল হয়ে আছে। যেন তার সেই প্রিয় ফিনিক ফোটা জোছনা। তার চোখ দুটো বন্ধ, সারা মুখে ক্লান্ত একটা ভাব। আহ কি কষ্ট! আমার তখন একটা কবিতা মনে পড়লো। এই কবিতাটা সে তার তরুণ বেলায় সবসময়ই আবৃত্তি করতো।’ ‘ক্লান্ত চোখ ক্লান্ত চোখের পাতা, তার চেয়েও ক্লান্ত আমার পা, মাঝ উঠোনে সাজের আসন পাতা একটু বসি? জবাব আসে না এখানে না।’ হ্যা সত্যিই এখানে না, তাকে যেতে হবে আরো দূরে তার প্রিয় নন্দন কানন নুহাশ পল্লীতে। এই চমৎকার বইটির মানানসই প্রচ্ছদ করেছেন লেখক নিজে। বইটি বের করেছে সময় প্রকাশনী। দাম ১০০ টাকা। আশা করি বইটি শীঘ্রই পাঠক প্রিয়তা অর্জন করবে। By- Md. Sakawat Hossain