User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
কাজী সাইফুল ইসলাম বর্তমান সময়ের একজন প্রতিভাবান লেখক। সময়ের বাস্তবতায় নামটি অতি পরিচিত না হলেও তীক্ষ্ণ অন্তরদৃষ্টি এবং প্রাঞ্জল লেখনীর তিনি অতি দ্রুত পাঠকের মনে স্থান করে নিচ্ছে। একুশে বইমেলা ২০১৩’তে প্রকাশিত হয়েছে তার নতুন উপন্যাস তিক্ত আকাশ। প্রকাশ করেছে ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ। তিক্ত আকাশ উপন্যাসটি মূলত সমকালীন সমাজের বাস্তবতার নিরিখে রচিত। উপন্যাসের নায়ক রুদ্র। তার জন্ম হয় অতি দরিদ্র এক পরিবারে। ভাগ্যের বিড়াম্বানায় বিস্তিতেই বাস করতে হয় ওদের। অন্ধকার, অশিক্ষা আর নির্মমতার মধ্যে বেড়ে উঠতে থাকে রুদ্র। বস্তির ছেলেরা সেই ছোট থেকেই মদখায়, গলির মোড়ে দাড়িয়ে থেকে মুখে অস্রব্য ছোটায় আর চুরি মাস্তানি করে পয়সা যোগায়। যা দিয়ে চলতে থাকে ওদের কারো কারো খাওয়া আর নেশা করার খরচ। আর ওরাই হযে উঠে রুদ্রর বন্ধু। এই সব বন্ধুদের সাথে বাধ্য হয়েই চলতে হয় রুদ্রকে। তাছাড়া সে যখন দেখে বাবা মদ খেয়ে এসে বিনা কারণে তার মায়ের উপরে চটে গিয়ে মারধর করছে। তখন জীবনে সব সুখ উবে গিয়ে জীবনটা তিক্ত হতে থাকে তার। জীবনে বেচে থাকার মৌলিক চাহিদাগুলোর অভাব সেই জন্মের পর থেকেই। এতো সব কিছুর মধ্যে মা হাল ছাড়ে না। মা বুঝতে পারে, বস্তিতে বসে অন্য ছেলেদের মতোই তার ছেলেকে গ্রাস করবে অশুভ কোন দানব। তবুও হাল ছাড়ে নি মা। দিনের পর দিন সময়ের সাথে যুদ্ধ করেই চলতে থাকেন। রুদ্রকে পাড়ালেখার শেখানোর জন্য যা কিছু তার সাধ্য মতো থাকে তার সেবটুকুই করে যেতেন তিনি। মা বুঝতে পারেন, শিক্ষাই হচ্ছে আলো। শিক্ষিত হলে এক সময় হযতো তার ছেলে আলো পথ পাবে। রুদ্র বাবা বস্তির নষ্ট একটি মেয়েকে নিয়ে যখন তার মাকে ছেড়ে চলে যায়। তখন কৈশোর ছেড়ে প্রথম যেৌবনে পা দিয়েছে রুদ্র। দেখা হয় ইরার সাথে। কালোকালো কথা বলা চোখে আর ফর্সা পবিত্র সুন্দর মুখ। ধনি পরিবারের মেয়ে। কিন্তু মুখে অহংকার নেই এতোটকুও। ইরার দিকে তাকিয়ে থাকলে বুকের ভেতরটা কেমন যে করে উঠে। এখানেই গল্পটার নতুন বাক নেয়। রুদ্র কিন্তু গতানুগতিক যে জীবন সে নিজেকে মেলে ধরে না। তার চিন্তা-চেতনায় বিশাল পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। অন্ধকার জগতে বেরে উঠেও সে আলোর স্বপ্ন দেখে। ইতোমধ্যে রুদ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্পণ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাধভাঙ্গা জীবনেও কিন্তু সে তার রাস্তা হারিয়ে ফেলেনি। মা, ইরা আর বস্তির ক্ষুধার্ত মানুষ গুলোর জন্য কাজ করতে থাকে রুদ্র। ধীরে ধীরে রুদ্রর চিন্তা চেতনা এবং সমাজের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি দেখেই মুগ্ধ হতে থাকে ইরা। সে রুদ্রর প্রতি আকৃষ্ট হয় তবে তা কখনও প্রকাশ করে না। তবে তারা দুজনেই স্বপ্ন বাধে, বিঞ্চতহীন সমানের। যেখানে মানুষের মুল্যায়ন হবে কর্মে। থাকবে না কোন বিভেদ, বৈষম্য। এভাবেই সাবলীল গতিতে এগিয়ে যায় গল্প। নিপীড়নহীন সমাজ এবং প্রতিবাদী চরিত্রের ছবি একে লেখক মার্কসের সেই বিখ্যাত উক্তিই মনে করিয়ে দিলেন “বিপ্লব কোন রাজনৈতিক দুর্ঘটনা নয়, বরং ঐতিহাসিক প্রয়োজনীয়তার অভিব্যাক্তি”। সমকালীন জীবনের বাস্তবতায় ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে রচিত “তিক্ত আকাশ” সকল বিবেকবান মানুষের অন্তরের সাথে মিশে যাবে।