User login
Sing In with your email
Send
Our Price:
Regular Price:
Shipping:Tk. 50
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
Share your query and ideas with us!
Was this review helpful to you?
or
সাধারণ দর্শক হিসেবে কিছুদিন আগে ‘চোরাবালি’ চলচ্চিত্রটি দেখেছিলাম। চলচ্চিত্রের কেন্দ্রীয় নারী চরিত্রটি একজন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিকের। অপরাধ বিষয়ে লেখালেখি করেন তিনি। তাঁর সাহসী সাংবাদিকতায় উন্মোচিত হয় খল চরিত্রটির স্বরূপ। একজন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিকও অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন করতে পারেন, শক্তিশালী সংবাদকর্মী হিসেবে কাজ করতে পারেন -- তার উদাহারণ চোরাবালির ছবির এই নায়িকা। চলচ্চিত্রটি তাই মন কেড়েছিল। চলচ্চিত্রটির পর সাধারণ পাঠক হিসেবে পড়লাম উপন্যাস ‘দ্য ফ্রিল্যান্সার’। কবি রাসেল মাহমুদের প্রথম উপন্যাস এটি। মুক্তচিন্তা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়েছে এবারের একুশে বই মেলায়। ‘দ্য ফ্রিল্যান্সার’ উপন্যাসটিও একজন ফ্রিল্যান্সারকে নিয়ে লেখা। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্রটি একটি প্রযুক্তিবিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। কিন্তু পড়াশোনা তাঁর ভালো লাগে না। তাঁর ধারণা, প্রযুক্তি বিষয় হিসেবে তাদের সিলেবাসটি অনেক পুরনো। তথ্যপ্রযুক্তির মতো প্রতিমুহুর্তে হালনাগাদ হওয়া একটি বিষয়ের সিলেবাস কেন পশ্চাদপদ হবে এ নিয়ে তার ধৈর্যচ্যূতি। এছাড়া তাঁর ধারণা, তাঁর শিক্ষকরাও তেমন কিছু জানেন না, কেবল বই দেখে পুরাতন সিলেবাস অনুযায়ী পড়িয়ে যান। তাছাড়া পাস করে প্রকৌশলী হয়ে সামান্য বেতনে ‘কেরানীগিরি’ করাটাও তাঁর কাছে একেবারেই বেমানান বা খুবই লজ্জাকর। তাই পড়াশোনায়ও মন নেই তাঁর। একসময় পড়াশোনা শেষ না করেই তিনি বের হয়ে যান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনার পাশাপাশি নিয়মিত ফ্রিল্যান্সার হিসেবে অনলাইনে আউটসোর্সিং করতেন। দেশে-বিদেশেও তাঁর অনেক গ্রাহক আছে। আর এই ফ্রিল্যান্সিং করেই তাঁর ভালো চলছে। কেবল তিনি একাই ফ্রিল্যান্সিং করছেন না। তার সঙ্গে নিয়েছেন আরও অনেক ফ্রিল্যান্সার, খুলেছেন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও। তাঁর বিশ্বাস দেশের তরুণরা যদি চাকরি না খুঁজে নিয়মিত ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করে, তাহলে একসময় দেশে চাকরি দেওয়ার লোকও খুঁজে পাওয়া যাবে না। আর সেই লক্ষ্যেই তাঁর এগিয়ে চলা, স্বপ্ন দেখা। একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হিসেবে তাঁর সুনামও ছড়িয়ে পড়ে দেশ-বিদেশে। তাকে দেখে অনেক তরুণ উদ্যোগী হোন। তার পথও অনুসরণ করেন অনেকে। শুধু উপন্যাসেই নয়, আমার ধারণা পাঠকরাও উপন্যাসের নায়ককে দেখে উদ্যোগী হবেন, তাকে অনুসরণ করবেন কিংবা ফ্রিল্যান্সার হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলবেন। সব মিলিয়ে আশা জাগানিয়া বা স্বপ্ন বুনোনের মতো একটি উপন্যাস ‘দ্য ফ্রিল্যান্সার’। তাই বিয়ষ হিসেবে ‘দ্যা ফ্রিল্যান্সার’ একেবারেই সময় উপযোগী। উপন্যাসে প্রাধান্য পেয়েছে দেশের বেকার সমস্যা, দূর্বল পড়াশোনা ব্যবস্থা, অপসংস্কৃতি ও আমাদের মানসিকতা। আমাদের বাবা-মা চান ছেলেমেয়ে পড়াশোনা করে কেবল অন্যের চাকর হবে। আর চাকর হলেই তাদের সুখ। তারা কেউ চান না ছেলেমেয়ে স্বাধীনভাবে কিছু করুক। কিন্তু রাসেল মাহমুদ চান তার উপন্যাসের নায়কের মতো সবাই স্বাধীনভাবে কিছু করুক কিংবা নিজেরাই উদ্যোগী হোক এবং অন্যকে উদ্যোগী হতে সহযোগিতা করুক। একজন অতি সাধারণ পাঠক হিসেবে উপন্যাসটি আমার ভালো লেগেছে। তাই এরকম একটি আশাজাগানিয়া উপন্যাস লেখার জন্য রাসেল মাহমুদকে ধন্যবাদ। গাজী মুনছুর আজিজ